• যতো লেখা

  • মাহাবুবুল হাসান নীরুর ই-গ্রন্থ 'সেরা দশ গল্প'। অসাধারণ দশটি গল্পের এক অনবদ্য উপস্থাপন। বইটি পড়তে ক্লিক করুনসেরা দশ গল্প
  • ছবি ফেলে আসা এবং চলমান সময়ের কথা বলে। ধরে রাখে সময়কে স্মৃদির ফ্রেমে। মাহাবুবুল হাসান নীরু অ্যালবামটি দেখতে ক্লিক করুনঅ্যালবাম
  • মাহাবুবুল হাসান নীরুর ই-গ্রন্থ 'হৃদয়ছোঁয়া পঁয়ত্রিশ'। দৃষ্টিনন্দন অলঙ্করণ আর মন-জমিনে দাগ কাটার মতো পঁয়ত্রিশটি ছড়া-কাব্য। বইটি পড়তে ক্লিক করুনকাছের মানুষ
  • মাহাবুবুল হাসান নীরুর খেলাধুলা বিষয়ক লেখা পড়ার জন্য ক্লিক করুনখেলা
  • মাহাবুবুল হাসান নীরুর শিশুতোষ লেখাগুলো পড়তে ক্লিক করুনশিশুতোষ রচনা
  • মাহাবুবুল হাসান নীরুর গল্প পড়তে ক্লিক করুনগল্প
  • মাহাবুবুল হাসান নীরুর ছড়া পড়তে ক্লিক করুনE-BOOK
  • এক মাসের লেখা

শিশুতোষ রচনা

বাঙ্গালি কিশোর আবেশের কৃতিত্ব

মাহাবুবুল হাসান নীরু

কিশোর চিত্রশিল্পী আবেশ

কিশোর চিত্রশিল্পী আবেশ

ক্যালগেরি বোর্ড অব এডুকেশনের আর্ট গ্যালারিতে অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো অ্যালবার্টা টিচারস এসেসিয়েশন-ফাইন আর্ট কাউন্সিল কর্ত্তৃক আয়োজিত অ্যালবার্টার শিক্ষক ও ছাত্রদের আঁকা শতাধিক ছবির এক মনকাড়া প্রদর্শনী। ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অনুষ্ঠিত প্রদর্শনীটি সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত ছিলো। অ্যালবার্টাস্থ বাঙ্গালি কমিউনিটির জন্য আনন্দের এবং ভালোলাগার মতো সংবাদ হচ্ছে, এ প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে এক বাঙ্গালি পরিবারের সন্তান তাহসিন ইসলাম আবেশের একটি চিত্রকর্ম। ক্যালগেরির ক্রসিং পার্ক স্কুলে গ্রেড এইট-এ অধ্যয়নরত আবেশের এ সাফল্যের সংবাদ আগেই শুনেছি, এরপর যখন আবেশের পরিবারের পক্ষ থেকে আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হলো, সে চিত্র প্রদর্শনী দেখতে যাবার জন্য, আমি তখন বেশ আগ্রহ বোধ করলাম। যদিও শারিরীকভাবে বেশ অসুস্থ, তারপরও তাদের আমন্ত্রণ গ্রহণ করলাম, কেননা, এ জাতীয় কর্মকান্ড আমাকে প্রবলভাবে আকর্ষণ করে। এ যেনো রক্তের সাথে মিশে থাকা একটা নেশা। একটু সাড়া পেলেই মন প্রবলভাবে নাড়া দেয়। কোনো চিত্র প্রদর্শণীতে গিয়ে প্রদর্শিত নানা ক্যানভাসে নানা চিত্রকর্মের মাঝে হারিয়ে যাওয়ার মধ্যে যে একটা আলাদা আত্মতৃপ্তি আছে সেটা চিত্র-রসবোধ সম্পন্ন প্রতিটি মানুষ মাত্রই স্বীকার করে থাকেন। যদিও অনেক চিত্রকর্মের অন্তর্নিহিত রহস্য ভেদ করা আমার মতো অতি সামান্য চিত্রপ্রেমিকের পক্ষে সম্ভব নয়। তারপরও শিল্পীর সেইসব সৃষ্টি অবলোকন করে হৃদয়তন্ত্রীতে একটা অন্যরকম সুখ বোধ করি। প্রদর্শনীতে প্রদর্শিত চিত্রকর্ম একেকটা একেকভাবে চিত্তকে আকর্ষণ করে। টেনে নিয়ে যায় সেই ছবির বিষয়-বৈচিত্রের গভীরে। মনের প্রজাপতি অবাধে পাখা মেলে কোনো কোনো চিত্রকর্মের জমিনে। ঢাকায় থাকাকালীন সময়ে শত ব্যস্ততার মাঝেও সময়-সুযোগ করতে পারলে চলে যেতাম বিভিন্ন আর্ট গ্যালারিতে অনুষ্ঠিত চিত্রকর্মের প্রদর্শণীতে। আর তাই অনেকটা বিনা বাক্যব্যয়ে আমি সম্মতি দিলাম।

প্রদর্শনীতে স্থান পাওয়া আবেশের আঁকা ছবি

প্রদর্শনীতে স্থান পাওয়া আবেশের আঁকা ছবি

১৭ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় বন্ধু আজহারুল ইসলাম মাখন, বন্ধুপত্নী শায়লা পারভিন পান্না ও তাদের দুই সন্তান আঁচল ও আবেশের সাথে উপস্থিত হলাম ক্যালগেরি বোর্ড অব এডুকেশন ভবনের সামনে। দিনটি ছিলো বরিবার। জানা ছিলো না সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় এদিন প্রদর্শনীও বন্ধ আছে। আবেশের বাবা কথা বললেন ডিউটিরত এক সিকিউরিটি অফিসারের সঙ্গে। একজন চিত্রশিল্পীকে সঙ্গে নিয়ে আমরা একটি পরিবার প্রদর্শনী দেখতে এসেছি জেনে অফিসার বিশেষ সহানুভূতি দেখালেন, আমাদের ভবনের ভেতোরে নিয়ে গেলেন এবং খুলে দিলেন গ্যালারির দরজা। ভিতোরে প্রবেশ করে সত্যিই আমি অভিভূত। যেনো নয়নাভিরাম চমৎকার এক স্বপ্নীল জগতে আমরা প্রবেশ করলাম। সৃদৃশ্যভাবে সাজানো সিনিয়র-জুনিয়র চিত্রকরদের আঁকা নানা বিষয়-বৈচিত্রসমৃদ্ধ নানা রংয়ের ছবি। নয়ন, মন দুই-ই কাড়ে।

প্রদর্শনীর একাংশ

প্রদর্শনীর একাংশ

আমরা প্রথমেই গিয়ে দাঁড়ালাম প্রদর্শনীতে স্থান পাওয়া আবেশের চিত্রকর্মটির পাশে। আবেশের চোখে-মুখে আনন্দের বন্যা, সেই আনন্দ ছড়িয়ে আছে বাবা-মা, বোনের চোখে-মুখেও। আমিও বেশ উপভোগ করছি কিশোর শিল্পীর এই সাফল্য। সাদা কাগজের ওপর পেন্সিলে আঁকা ছবি। হেডফোন অঙ্কিত ছবিটির শিরোনাম হচ্ছে, ‘Beats in the air’। ছবির পাশে স্থান পেয়েছে ছবি সম্পর্কিত শিল্পীর বক্তব্য। যেখানে এই কিশোর শিল্পী উল্লেখ করেছে,…I think the arts are important because without something like music there wouldn’t be emotion in dance. No dance means no excitement. I also think the art are important because they make you happy. For example, if you listen to happy and exciting music, you’ll most likely be happy…

প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে মোট তেষট্টি জন শিল্পী আঁকা তেষট্টিটি ছবি। কোনোটায় ব্যবহার করা হয়েছে ওয়াটারকালার, কোনোটা তৈলচিত্র, কোনোটাবা পেন্সিল স্কেচ। কোনো চিত্রে ফুটে উঠেছে প্রকৃতির রূপ, কোনোটায় জনপদ, জীবন, নারী-শিশু, পরিবারের মাঝে বিমূর্ত চিত্রকর্মও রয়েছে।

বেশ কিছুটা সময় গ্যালারির মনোরম পরিবেশে কাটিয়ে আবেশের পরিবারের সাথে যখন ফিরলাম তখন মন জুড়ে ছড়িয়ে ছিলো অসম্ভব ভালোলাগা আর সুখানুভূতি এক বাঙ্গালি পরিবারের প্রতিভাধর সন্তানের কৃতিত্বের জন্য।

২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩

ক্যালগেরি, কানাডা।

Leave a comment