বেঙ্গলি টাইমস রিপোর্ট
হুমায়ূন আহমেদ আমার দৃষ্টিতে ছিলেন, আমাদের সাহিত্য-নগরের যাদুকর বংশীবাদক। অদ্ভূত এক যাদুর বাঁশি নিয়ে এই অসাধারণ প্রতিভাধর মানুষটি পা রেখেছিলেন বাংলা সাহিত্যের আঙ্গিনায়। তিনি তাঁর সে বাঁশির অপ্রতিরোধ্য সুর-মূর্চ্ছণায় মোহাচ্ছন্ন করে চুম্বকের মতো আমৃত্যু টেনে ধরে রেখেছিলেন সুবিশাল পাঠক-গোষ্ঠি। একাধারে সৃষ্টি করেছেন নতুন নতুন পাঠক। আমাদের মতো দেশে বই লিখে কতোটা জনপ্রিয়তার শিখরে আরোহন করা যায়, হওয়া যায় কতো অর্থ-বিত্তের মালিক তার এক অনন্য-সাধারণ উদাহরণ স্থাপন করে গেছেন এই নন্দিত কথাশিল্পী। একই সাথে প্রশস্ত করে দিয়ে গেছেন বাংলা সাহিত্যের নবাগত ও অনাগত লেখকদের পথ। নাটক, চলচ্চিত্রেও এনে দিয়েছেন নতুন প্রাণ। মোট কথা যে মাধ্যমেই তিনি হাত রেখেছেন; সেখানেই ফলেছে সোনা। আর দিনে দিনে হুমায়ূন সম্পদে সমৃদ্ধ হয়েছে বাংলাদেশের গোলাঘর। হুমায়ূন আহমেদের সব সৃষ্টিই যে সমান মূল্যবান বা সমান গুরুত্ব বহন করে এমনটি নয়, কিন্তু তাঁর অধিকাংশ সৃষ্টিই বাংলা সাহিত্য, নাটক ও সিনেমায় অমূল্য সম্পদ হিসেবেই বিবেচিত হবে। তবে বড় দুঃখজনক ব্যাপারটি হচ্ছে, অকালে; অসময়ে তাঁর এই মহাপ্রয়াণ। মেনে নিতে অনেক কষ্ট হয়। অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেলো দেশ ও জাতির; যা পূরণ হবার নয়। এমন প্রতিভা যুগে যুগে জন্মান না; এমন আর এক হুমায়ূন আবার কতো যুগ পর বা কতো কাল গত করে বাংলায় জন্মাবে তা একমাত্র ভবীতব্যই বলতে পারেন। দীর্ঘ সময় সাপ্তাহিক রোববার ও পাক্ষিক ক্রীড়ালোকের মতো বাংলাদেশের অন্যতম প্রভাবশালী ও জনপ্রিয় দুটো পত্রিকা প্রকাশের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে; অর্থাৎ পেশাগত জীবনের আঁকে বাঁকে অনেকবার তাঁর সাথে দেখা হয়েছে, কথা হয়েছে। ভালো লাগতো তাঁর সোজা-সাপ্টা কথা বলার সাবলীল অথচ বিশেষ ঢঙ্গটা। এভাবে সবাই বলতে পারে না, এর জন্যও একটা বিশেষ ক্ষমতার প্রয়োজন, আর সেটা তিনি রপ্ত করেছিলেন তাঁর অসামন্য প্রতিভা বিনিয়োগ করে। আমি তাঁর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করি।
Filed under: Uncategorized |
Leave a comment